নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সদর হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত রেডিওলজিস্ট ও সাফেঈন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ডাঃ এ.এস.এম রেজাউল মাহমুদের বিরুদ্ধে রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অশালীন আচরণ এবং অহংকারী মনোভাবের অভিযোগ উঠেছে। রোগীরা অভিযোগ করছেন, তার ব্যবহারের কারণে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং চিকিৎসা সেবার চেয়ে বেশি ভীতির সম্মুখীন হচ্ছেন। স্থানীয় রোগী এবং সেবাপ্রত্যাশীরা একাধিকবার তার অমানবিক আচরণের শিকার হয়েছেন।
একজন রোগী, জান্নাত ওরফে নাইমা, জানান, সাফেঈন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে গিয়ে তিনি বাজে ব্যবহারের শিকার হন। তার অভিযোগ, ডাক্তার রেজাউল তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন এবং প্রশ্ন করার চেষ্টা করলে তাকে অপমান করেন। নাইমা বলেন, এমন ব্যবহার কোনো শিক্ষিত মানুষের কাছ থেকে আশা করা যায় না, এবং তার অভিজ্ঞতা এতটাই খারাপ ছিল যে তিনি প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে পড়েন।
স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা প্রবির পাল বলেন, ডাক্তারের চেকআপ ভালো হলেও তার ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। তিনি অহংকারী এবং রোগীদের সঙ্গে বাজে মন্তব্য করেন। অন্যদিকে, সোহেল আলম নামে এক রোগী তাকে “অহংকারী ও বেয়াদব” বলে আখ্যা দেন এবং তার অতিরিক্ত অহংকার নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গণমাধ্যম কর্মী একে সাজু অভিযোগ করেন, ডাঃ রেজাউল মাহমুদ রোগীদের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় রূঢ় আচরণ করেন এবং অহংকারের কারণে রোগীদের মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন। আরও বেশ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন যে, ডাক্তারের সেবা গুণগত মানসম্পন্ন হলেও তার আত্নঅহংকার ও রূঢ় ব্যবহারের কারণে রোগীরা প্রায়ই অস্বস্তি অনুভব করেন। তাদের মতে, একজন ডাক্তার রোগীর সঙ্গে সহানুভূতিশীল ব্যবহার না করলে রোগীর সুস্থতা প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডাঃ এ.এস.এম রেজাউল মাহমুদ দাবি করেন যে, তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ পুরোপুরি সঠিক নয়। তিনি জানান, টেস্ট করার সময় রোগীরা সঠিকভাবে না শোয়া বা যন্ত্রপাতিতে হাত দেওয়ার কারণে তাকে কখনো কখনো কঠোরভাবে কথা বলতে হয়। তিনি আরও বলেন, তার আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের দাম ৮০ লাখ টাকা, যা সঠিকভাবে ব্যবহারের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, তার আচরণে কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে তিনি অনুতপ্ত।
এ বিষয়ে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, একজন চিকিৎসকের দায়িত্ব হলো রোগীদের সঙ্গে সুন্দর ও সহমর্মিতাপূর্ণ ব্যবহার করা। ডাঃ রেজাউল মাহমুদের বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
নওগাঁর অনেক সেবাপ্রত্যাশী মনে করেন, সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা চিকিৎসা সেবার একটি অপরিহার্য অংশ। তবে, এই ধরনের অভিযোগের কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এজন্য সবার দিক থেকেই আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা প্রয়োজন।