অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ টেলিভিশনের নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী শিল্পী ও কলাকুশলীরা। দীর্ঘদিন ধরে তারা রাষ্ট্রায়ত্ত এই টেলিভিশন চ্যানেল থেকে দূরে ছিলেন। টেলিভিশনের কর্মকর্তাদের স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ ও দুর্নীতির কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে বঞ্চিতদের সৃজনশীলতা। বঞ্চিত এই শিল্পী, গীতিকার ও কলাকুশলীরা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিটিভি ভবনের সামনে কর্মসূচিতে এসব কথা জানান। বিটিভির ডিজিসহ দুর্নীতিতে যুক্ত কর্মকর্তাদের পদত্যাগ চান তারা। দীর্ঘ সময় ধরে শিল্পীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে বলে মনে করেন গীতিকার শেখ সাদি খান। তিনি এ আয়োজনের আহ্বায়ক। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বিটিভি, রেডিও, শিল্পকলা একাডেমিসহ সাংস্কৃতিক যে প্রতিষ্ঠান আছে, সেখান থেকে বৈষম্য দূর হোক। আমরা কর্মবণ্টন চাই। যাদের প্রতিভা রয়েছে, তাদের মূল্যায়ন করা হোক। এ ছাড়া বিটিভিতে দীর্ঘ দিন ধরে দুর্নীতি চলছে, এ নিয়েও অনেক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ দেখে, জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের এই অনিয়মতান্ত্রিকতা বন্ধ হোক। এতে শিল্পীদের মর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে, শিল্পীদের মন ভেঙে যাচ্ছে।’ বাংলাদেশ টেলিভিশনে বছরের পর বছর যোগ্যদের মূল্যায়ন নেই, বিভিন্ন অডিশনে মেধাবীদের বাদ দিয়ে কর্তৃপক্ষের পছন্দের লোকদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শেখ সাদি খান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অডিশনের নামে যা-তা হয়েছে, এটা বন্ধ হোক। নতুন করে যারা মেধাবী, তাদের মূল্যায়ন এখন সময়ের দাবি। কারণ আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের একটাই কথা, শিল্পাঙ্গন থেকে দুর্নীতি, অরাজকতা দূর হোক। একটি সুন্দর দেশ গড়ার ক্ষেত্রে সংস্কৃতির যে অবদান, সেই জায়গায় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেখতে চাই।’ বাংলাদেশ টেলিভিশন, শিল্পকলা একাডেমি, বেতারসহ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান থেকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করার আহ্বানে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন ও দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গীতিকার, সুরকার, কণ্ঠশিল্পী, যন্ত্রশিল্পী ও অন্য কলাকুশলীরা বিটিভির সামনে একত্র হন। এখান থেকে বেলা ১১টার পর বিটিভির সামনে কর্মসূচি শেষে তারা শিল্পকলার উদ্দেশে যাত্রা করেন। কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন ফোয়াদ নাসের বাবু, পার্থ মজুমদার, পলাশ, আবু বকর সিদ্দিকী প্রমুখ।